Skip to content

রহস্যে ঘেরা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেঁল । কি, কোথায়, কেনো, কিভাবে

by saif71 | Last Updated:
May 6, 2022 | 05:25 PM
রহস্যে ঘেরা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেঁল । কি, কোথায়, কেনো, কিভাবে

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল কী:

এই জায়গার নাম শুনে নাই এমন লোক মানে হয় কমই আছে। )বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল মূলত একটি কাল্পনিক এিভূজ এরিয়া। কথিত আছে এর সীমানার ভেতর আচমকা হারিয়ে যায় জাহাজ, বিমানসহ অনেক কিছু। যার হদিস আর কোনোদিন এ পাওয়া যায় নাহ। রেডিও সিগনাল নষ্ট হবে, কম্পাস লাটিমের মত ঘুরতে থাকবে।এমনকি রাডারও আপনাকে খুঁজে পাবে না। এর শত শত উদাহরণ আছে।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল যা শয়তানের ত্রিভুজ নামেও পরিচিত, আটলান্টিক মহাসাগরের একটি বিশেষ অঞ্চল, যেখানে বেশ কিছু জাহাজ ও উড়োজাহাজ রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়ার কথা বলা হয়। অনেকে মনে করেন ঐ সকল অন্তর্ধানের কারণ নিছক দুর্ঘটনা, যার কারণ হতে পারে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা চালকের অসাবধানতা। আবার চলতি উপকথা অনুসারে এসবের পেছনে দায়ী হল কোন অতিপ্রাকৃতিক শক্তির উপস্থিতি। তবে অনেকে ধারনা করেন যে যেসব দুর্ঘটনার উপর ভিত্তি করে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলকে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলো বেশ কিছু ভুল, কিছু লেখক দ্বারা অতিরঞ্জিত হয়েছে এমনকি কিছু দুর্ঘটনার সাথে অন্যান্য অঞ্চলের দুর্ঘটনার কোনই পার্থক্য নেই।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এর সীমানা:

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের সীমানা বেশ সোজা সাপটা। দ্বীপটার নাম বারমুডা প্রথম আবিষ্কৃত হয় ১৫৬৫ সালে।আবিষ্কার করেন স্প্যানির্য়াড নাবিক জুয়ান ডি বারমুডেজ।তার নামানুসারেই নামকরণ করা হয় এই দ্বীপের।দক্ষিণে পুয়েরটো রিকো,সেখান থেকে পশ্চিমে ফ্লোরিডা হয়ে Gulf of Mexico এর বিন্দু,এখান থেকে আবার বারমুডা পর্যন্ত রেখা টানলে যে এিভূজ অংকিত হয় তাকেই বলা হয় বারমুডা ট্রায়াঙ্গেঁল(Bermuda Triangle)।

কীভাবে গ্রাস করে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল:

মনে করুন আপনি একটি বানিজ্য নৌবহরের ক্যাপ্টেন। অতি সাহসী আপনি। বানিজ্য শেষে দেশে ফেরার পথে বারমুডা(Bermuda Triangle) সম্পর্কে সকল আতংক উপেক্ষা করে শর্ট-কাটের(Short-cut) ধান্দায় ঢুকে পড়লেন বারমুডার সীমানায়। এগিয়ে চলেছেন, বিপদের চিহ্ন-মাএ নেই।

আপনার অধীনে থাকা পাঁচটি জাহাজের নাবিকদের উপর মেজাজ খারাপ হচ্ছে।ধূর ব্যাটা!বেকুব কোথাকার! শুধু শুধু ভয় পায়। এমন সময়……………….জাহাজের চারপাশে কালো হয়ে যেতে লাগল সাগরের পানি।আপনার জাহাজগুলোকে ঘিরে দিনের বেলা নেমে এলো রাতের বিভীষিকাময় আধার।শুরু হল ঝড়।দুশো ফুট একেকটা ঢেউ ধেয়ে আসছে আপনার জাহাজের দিকে। হঠ্যাৎ ভেঙে পড়ল আপনি যে জাহাজটায় দাড়িয়ে আছেন তার মাস্তুল। সাথে সাথে থেমে গেল ঝড়। সম্পূর্ণ শান্ত হয়ে গেল সমুদ্র। স্থিতি হয়ে বাকি চারটা জাহাজের কথা মনে পড়ল আপনার।কিছুক্ষণ পর একটি জাহাজের সন্ধান পেলেন, বাকি তিনটি? ঠিক এ ঘটনাই ঘটেছিল কয়েকটি বাণিজ্যিক জাহাজের সাথে ১৭৫০ সালের মাঝামাঝি সময়ে। বাকি তিনটি জাহাজ আর কোন দিন ফিরে আসেনি।ডুবে গেলেও ছেড়া পাল, কাঠের টুকরা, মৃতদেহ ইত্যাদি ভেসে থাকার কথা কিন্তু সেসব ছিল না কিছুই। পরবর্তীতে আশেপাশে হাজার মাইল খোজা হলো খোঁজ মেলে নি হতভাগ্য তিন জাহাজের।

বারমুডায় হারিয়ে যাওয়া জাহাজ সমুহঃ

¤ ১৮১১ সালের U.S. Navy এর দুর্ধষ জাহাজ “ওয়াসপ” নাম শুনলেই কলিজার পানি শুকিয়ে যেত আমেরিকার তখনকার শত্রু ব্রিটিশদের।নেভির সেরা সব নাবিক দ্বারা ঠাসা ছিল সেটি।১৮১২-১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে “বারমুডা ট্রায়াঙ্গেঁল” এলাকায় টহলের সময় হঠ্যাৎ গায়েব হয়ে যায়। USS Wasp কে বলা হয়ে থাকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এ সবচেয়ে বিখ্যাত ভিক্টিম।

(আপডেটঃ আমি এই আর্টিকেলটি লিখেছিলাম ২০১৩ সালে। তখন পর্যন্ত USS Wasp এর কোনো হদিস পাওয়া যায় নি। তবে সম্প্রতি নতুনভাবে তদন্তে জানা যায় যে, জাহাজটি ১৯৪২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর জাপানি সাবমেরিন I-19 থেকে তিনটি টর্পেডোর আক্রমনের শিকার হয়। প্রায় ৭৭ বছর পর ১৫ জানুয়ারী ২০১৯-এ, ওয়াস্পের ধ্বংসাবশেষ গবেষণা জাহাজ “পেট্রেল” খুজে পায়।)

¤ ১৯০৯ সালে “Joshua slocum ” এর অধীনে থাকা “Spray” জাহাজটিও গায়েব হয়।দক্ষিণ আমেরিকা যাওয়ার পথে বারমুডা গ্রাস করে এটিকে। আগের মতোই কয়েকশ মাইল ঘাটলেও খুজে পাওয়া যায় নি।

¤ এরকমভাবে আজব অন্তর্ধানের শিকার হয়েছে আরও অনেক জাহাজ।তাদের মধ্যে অন্যতম কয়েকটি ১৮২৪ সালে ইউ.এস. ওয়াইল্ড ক্যাট ।এটি গায়েব হয় কিউবা থেকে থম্পস যাওয়ার পথে।১৯৬৫ সালে “স্নোবয়” কিংস্টন থেকে মর্থ ইষ্ট বন্দরে যাবার পথে।

এরকম জাহাজ হারিয়ে যাওয়ার খবর আরও আছে।তবে তার মধ্যে আছে কিছু নিতান্তই মনগড়া কাহিনী।ওসব তাই নাই বা বললাম।

[এই সিরিজটির আসল লেখক আমি। এটি পুর্বে Eduportalbd.com এ প্রকাশিত করেছিলাম।কিন্তু কিছু উন্মাদ ব্যাক্তি এই সিরিজটি নিজের ব্লগে নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছে।

আজব ভাবে নিখোঁজ জাহাজ ও বিমান, কেন এই অন্তর্ধান, সম্ভাব্য কারণ

বারমুডায় হারিয়ে যাওয়া জাহাজগুলোর কথা তো আমরা জানলাম, এবার আসা যাক বিমান গুলোর ব্যাপারে।২৮ ডিসেম্বর ১৯৪৯সাল।স্যান জুয়ান থেকে মায়ামির উদ্দেশ্যে যাএা করল একটি DC-3 বিমান। ল্যান্ড করার কিছুক্ষণ আগে মায়ামি টাওয়ারের সাথে যোগাযোগ করল পাইলট। সব ঠিকঠাক।কিন্তু হঠাৎ করেই মায়ামি টাওয়ারের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেল NC16002 DC-3 বিমানটিNC16002 DC-3

জরুরি বিপদ সংকেত ঘোষণা করল মায়ামি টাওয়ার। মায়ামির আশেপাশের কয়েকশো বর্গ মাইল এলাকায় সমস্ত জলযান ও নৌযান সর্তক হয়ে গেল।কয়েকটা সার্চ প্লেনও কাজে লেগে গেল।আবহাওয়া অফিস থেকে জানা গেল সেদিন তো দূরে থাক গত কয়েক সপ্তাহেও কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি ঐ এলাকায়।বিমান বিধ্বস্ত হওয়ারও কোন চিহ্ন পাওয়া গেল না আশেপাশে কয়েকশো বর্গ মাইলের স্থলে বা জলে।পাওয়া যায় নি কোনদিনও।জানিয়ে রাখি DC-3 কে শেষ দেখা যায় বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এলাকায়।

জ্যাক্সনভিল শহরে সিসিলফিল্ড বিমান ক্ষেএ থেকে ট্রেনিং দেয়া হয় অত্যন্ত অভিজ্ঞ সব পাইলটদের উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য।১৯৪৫ সালে একই ভাবে রুটিন মাফিক আকাশে উড়েছিল SB2C Hell Driver নামের ১২টি বিমান।বারমুডা আশপাশ থেকে ঘুরে আসার কথা ওদের।ফিরে এলো ঠিকই কিন্তু ১০টি। DC-3 এর মতোই তন্ন তন্ন হয়ে খোজা হল তাদের।কিন্তু ভাই এটা তো বারমুডা। SB2C Hell Driver

একই বছর Florida Fort Lowerdel Air Station থেকে “Flight 19” মহড়ায় অংশ গ্রহণ করে তৎকালীন সর্বশ্রেষ্ঠ প্রযুক্তির ৫টা অ্যাভেন্ঞ্জার বিমান।হঠাৎ ইমারজেন্সি সংকেত পাঠানো হল

“Flight 19” এর লিডারের কাছ থেকে কন্ট্রোল টাওয়ারে।বলা হল “পথের দিশা হারিয়ে ফেলেছি আমরা” এয়ারবেস থেকে মাত্র ৭০-৮০ মাইল দূরে এত অভিজ্ঞ পাইলটদের পথ হারিয়ে ফেলার মানেটা কি? হঠাৎ লক্ষ্য করল টাওয়ার অপারেটর রাডার ডাটা থেকে বেমালুম গায়েব হয়ে গেছে ৫টা বিমান।বিপদ সংকেত ঘোষণা করা হল।“Flight 19” থেকে সর্বশেষ বার্তা শোনা গেল “We are completely lost”.খোঁজ নেমে পড়ল অত্যাধুনিক প্রযুক্তির “মার্টিন মেরিনার”-পাইলট লেফটেন্যান্ট হ্যারি।ভোজবাজির মতো অবিশ্বাস্য ভাবে নিখোঁজ হয়ে গেল সেটিও মাএ ৫০ মিনিটের মাথায়।পরদিন সর্বমোট ৪০ টি সার্চ প্লেন,২৫০ কোস্ট গার্ড ও আশেপাশের সকল নৌযান ও জলযান নেমে পড়ল ৫টা অ্যাভেন্ঞ্জার ও মার্টিন মেরিনার খোজে।পাওয়া যায় নি আজও তাদের।এরকম আরও কাহিনী রয়েছে।বারমুডার উপর থেকে উড়ে যাবার সময় বনবন করে ঘুরতে থাকা কম্পাসের কাটা,মাঝে মাঝে রহস্যজনক কুয়াশার সৃষ্টি,আবার হঠাৎ করেই মিলিয়ে যাওয়া………..ওসব সবই কাছাকাছি গল্প।আসুন এবার দেখা যাক,

কি আছে এই বারমুডা রহস্যের মূলে:

বারমুডায়(Bermuda Triangle) একের পর এক জাহাজ, বিমানগুলোর হারিয়ে যাওয়ার সম্পর্কে প্রথম খোঁজ শুরু করেন “মি.কুসচে”,তার বক্তব্যে পরে আসি। আগে দেখা যাক বারমুডার এসব আজব অন্তর্ধানের রহস্যের কারন কি হতে পারে।

কে বা কারা এর পিছনে, Alien বা অন্য কেউ?

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে ঘটে যাওয়া আজব রহস্য গুলোর কারণগুলোর ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব এখন।কারণগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে, “ভিনগ্রহের অতি বুদ্ধিমান কোন প্রাণী।”

পৃথিবীতে আদিম কাল থেকেই একটা প্রতিহিংসা মূলক নিয়ম চালু আছে।সেটা হল বিশেষ গবেষণার উদ্দেশ্যে অপহরণ করা। যেটা করতেন আমাদের “নেপোলিয়ন বেনাপোর্ট” কাকু। এই লোক বিভিন্ন দেশ থেকে কবি, সাহিত্যিক, গবেষকদের হত্যা না করে নিয়ে আসতেন নিজের দেশে। তাদের সাহায্যে নিজের রাজ্য সুসংহত করতেন।এই একই কাজ করত রোমান, গ্রীক, চৈনিক মিং, মিসরীয় ইত্যাদি সভ্যতার শাসকেরা।

ভিনগ্রহের অতি বুদ্ধিমান প্রাণী অর্থাৎ এলিয়েনরাও তাই করছে? U.F.O. বা Unidentified Flying Object সর্ব প্রথম নজরে আসে ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর। এদের উপস্থিতির প্রমাণ Google, YouTube খুঁজলেই পেয়ে যাবেন। তথ্য প্রমাণাদি থেকে দেখা যায় ১৯৪৩ সালের থেকে পৃথিবীতে U.F.O. এর আগমন বেড়ে যায়। তার চেয়েও বিস্ময়কর তথ্য হল এর মধ্যে অনেকগুলোই দেখা গেছে বারমুডার ভিতর।

এবং জাহাজ বা বিমান অন্তর্ধানের সময়ের সাথে এদের উপস্থিতির সময়েরও বিস্ময়কর মিল রয়েছে এ ব্যাপারে আমেরিকার National Investigation Committee on Arial Phenomenal Society ও লিম্বো অফ দ্যা লস্ট বইয়ের লেখক “John Spensar” বলেছেন,“বারমুডায় হারিয়ে যাওয়া জাহাজ বা বিমানগুলোর কারণ U.F.O. পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত যে সব U.F.O. দেখা গিয়েছে তার ভিতর বিমান, জাহাজ তুলে নিয়ে বেমালুম লুকিয়ে ফেলা যাবে”। এর কারণ হিসেবে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, “হয়ত অন্য গ্রহের প্রাণীরা বসে বসে নমুনা সংগ্রহ করছে পৃথিবীর প্রযুক্তির” অবশ্য কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ এ ব্যাপারে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। তারা বলেছেন যে, পৃথিবীর মানুষের পারমানবিক ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা এবং এর নমুনা সংগ্রহ করতে।

ধরা গেল আমাদের Alien দের প্রধান উদ্দেশ্য পৃথিবী থেকে জাহাজ বা বিমান অপহরণ করা এবং সেটা নিয়ে গবেষণা করা। কিন্তু “যত দোষ নন্দ ঘোষ” এর মত বারমুডার উপরেই তাদের নজর কেন? কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন শুধু বারমুডাই নয় এরকম আরও কয়েকটি জায়গা আছে পৃথিবীতে যেখানে রহস্যজনক ভাবে ঘটে যায় ব্যাখাতীত সব ঘটনা। এরকম জায়গাগুলো হল:

মজার ব্যাপার হচ্ছে এগুলোর প্রত্যেকটিতেই প্রায়ই এলিয়েন বাবাদের আসা যাওয়া দেখা যায়।তবে বড়গুলো দেখা যায় বারমুডা তেই।ব্যাপারটা অনেকটা এরকম এলিয়েন বাবাদের “Command Centre” বা “Main Base” হল বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে এবং বাকীগুলো হল “Sub-Base” বা “Sub-Station”। এবার Alien দের সম্পর্কে একটু Positive দিকে যাই।পৃথিবীতে কিন্তু কয়েক হাজার বছর আগে থেকেই U.F.O. দের আনা গোনা।তার বহু জলজ্যান্ত প্রমাণ আছে। এমন যদি হয় আপনি একটা দেশের President।আপনার পাঠানো কোন এক দল গুরত্বপূর্ন সেনাদল আটকে রেখেছে অন্য কোন দেশ।কি করবেন? নিশ্চয়ই দলবল নিয়ে খোজে নেমে পড়ার।তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করবেন।তাই না? এলিয়েনরাও কি তাই করছে?

চিন্তা করে দেখুন হতে পারে।কারণ সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ, তার ক্ষমতা অনেক।পৃথিবী বহুবার এলিয়েনরা এসেছে।সে সম্পর্কে গত পর্বেও আলোচনা করা হয়েছে।আগামীতেও আশা করি হবে।এরকম গণহারে পিকনিকে আসা এলিয়েন মামাদের একজনকেও কি মানুষের পক্ষে আটকে রাখা সম্ভব না?অবশ্যই সম্ভব।আমাদের পৃথিবীর কেউ বা কোন দেশ আটকে রেখেছে তাদের কাউকে।হয়তোবা সেই আটকানোর স্থানটি বারমুডা।কিন্তু প্রশ্ন জাগে তাহলে জাহাজ, বিমান কেন গায়েব হয় থেকে।একটাই উওর আমাদের ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা লাভের জন্য।

বারমুডা রহস্যে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড

বারমুডা সম্পর্কে রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে আরও যে একটি কারণ ধারণা করা হয় তা হল:
“অতি শক্তিশালী ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড”

প্রশ্ন হচ্ছে Electromagnetic Field কি বস্তু?

এটার বাংলা হচ্ছে বৈদ্যুতিক চৌম্বকীয় ক্ষেত্র।সাধারণ বিদ্যুৎ ক্ষেত্র বলতে চারপাশে সৃষ্ট চৌম্বক ক্ষেত্র কে এই নামে অবহিত করা হয়। অধিক সক্রিয় ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড এর বস্তুকে আকর্ষণ অস্বাভাবিক ক্ষমতা আছে।বা বৃহৎ পরিসরে এই ফিল্ড সৃষ্টি করলে বিকল হয়ে ইলেক্ট্রনিকস ইকুইপমেন্ট, বন বন করে ঘুরতে থাকা কম্পাসের কাটা, রেডিও ট্রান্সমিশন সিস্টেম বিকল হয়ে যায়।কিছু কি মনে পড়ছে? 😀 বারমুডা করাল গ্রাস থেকে ফিরে আসা জাহাজগুলোর নাবিক ও ক্যাপ্টেনরা কিন্তু তাদের বর্ণনায় এগুলোই বলেছেন।প্রাথমিকভাবে ধারণা করে নিচ্ছি যে, বারমুডায় জাহাজ, বিমান হারিয়ে যাওয়ার পেছনে আছে এই ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড।বারমুডা ঐ অঞ্চলে আছে সক্রিয় EMF।যার প্রভাবে ঝামেলা হয় বিমান ও জাহাজগুলোতে।কিন্তু তাহলেও একটি প্রশ্ন এসে যায় যে, সবসময় সক্রিয় থাকে না EMF?যদি তা প্রাকৃতিক হয় তবে সবসময়ই সক্রিয় থাকার কথা।আরে ভাই এখানেই তো ঝামেলা।তার মানে বোঝাই যাচ্ছে এটা কৃএিম।কিন্তু ইহার প্রস্ততকারক কে?এর উওর জানা যায় নি এখনো।দেখা যাচ্ছে এরকমটা করার ক্ষমতা থাকতে পারে আমাদের এলিয়েন মামা দের, কিংবা আমাদের বর্তমান কোন দেশের অথবা আমাদের ভবিষ্যতের মানুষদের।ঠিকই বলছি ভবিষ্যতের মানুষদের। কেন Time Travel এর নাম শোনেনি?

টাইম ট্রাভেল, টাইম মেশিন, ভবিষ্যতের মানুষরা

যদি আপনাকে কেউ জিজ্ঞেস করে যে,“বলুন তো আগামী ১০বছর পর অমুক জায়গায় কি হবে?” অধিকাংশ মানুষ যা উওর দেয় তা হল,“আমি ক্যামনে জানব?আমার কাছে কি Time Machine কাছে নাকি?” 😛 ভালই হত যদি Time Machine থাকত!তবে যাই হোক আপনারা হয়তো ভাবছেন বারমুডার রহস্যের মাঝখানে Time Machine এর কথা তুললাম কেন!আচ্ছা এমন যদি হয় যে আমাদের পৃথিবীর কয়েকশ বছর ভবিষ্যতের মানুষেরা এসে এসে তুলে নিয়ে আমাদের সময়ের জাহাজ,বিমান, আর মানুষ গুলোকে?

টাইম ট্রাভেল,টাইম মেশিন ও টাইম ট্র্যাপ:

এই সম্পর্কে মোটামুটি সবারই ধারণা আছে।তাই বেশি জটিলতায় না গিয়ে সোজা বাংলায় বলি, Time বা সময়ের মধ্যে ঘোরাঘুরি হল Time Travel.আর আপনার এই ঘোরাঘুরিতে যে যন্ত্রখানা সাহায্য করবে তা হল Time Machine. “আইনস্টাইন” আংকেলের সূত্রানুযায়ী “Time Travel” মূলত একটি স্থানে থেকে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পরিভ্রমণ করা।

Einstein

কেউ কেউ বলে থাকেন “ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফোর্সের” সাহায্যে এটি করা সম্ভব।সেই হিসেবে ভবিষ্যতের মানুষদের আমাদের সময়ে আসার জন্য একটা ক্ষেত্র কিন্তু অবশ্যই দরকার।হতে পারে সেই ক্ষেত্রটি বারমুডা(Bermuda Triangle)।বলা হয়ে থাকে টাইম ট্রাভেলের জন্য ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড জরুরি।আর বারমুডায়(Bermuda Triangle) ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডের কথা তো আগেই আলোচনা করা হয়েছে।

সবগুলো যুক্তি একত্র করলে যেটা দাড়ায় সেটা হল বহু বছর ভবিষ্যৎ থেকে আমাদের পৃথিবীর মানুষেরা মাঝে মাঝেই আমাদের সময়ে চলে আসে।মাঝে মাঝে পছন্দ হলেই তুলে নিয়ে যায় এ সময়ের অনেক কিছুই।আর তাদের আসার ক্ষেত্র হল বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এবং এরকম অন্যান্য রহস্যময় জায়গাগুলো।কিছুটা হাস্যকর শোনাচ্ছে, কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটা সম্ভব। যদি তাই হয়, তবে আকাশে প্রায়ই যে অদ্ভুত আকাশযানগুলো দেখা যায়, সেগুলো কি আমাদের ভবিষ্যতের মানুষদের?হতে পারে!!!আরে ভাই Nothing Is Impossible…..তবে শুধু তাই নয় প্রকৃতিকভাবেও নাকি “টাইম ট্র্যাপ ডোর” সৃষ্টি হয়।এমনটাই বলেন কিছু কিছু বিজ্ঞানী।আর এই সব Natural Created “টাইম ট্র্যাপ” দিয়ে আমাদের সময়ের মানুষেরা ঢুকে পড়ে অন্য সময়ে।

১৯২৯ সালে বৈজ্ঞানিক অ্যাডমিরাল রির্চাড র্বাড উড়ে যাচ্ছিলেন দক্ষিণ মেরুর চুম্বক ক্ষেত্র দিয়।সেখানে শুধু

Image source:Wikipedia

মাইলের পরে মাইল বরফ।কিন্তু হঠাৎ দেখলেন বার্ড তার বিমান উড়ে যাচ্ছে সবুজ তৃণভূমির উপর দিয়ে।চামড়ার পোশাক পড়া কয়েকজন আদিম মানুষও দেখলেন তিনি।তবে কি রাস্তা ভুল করলেন?না!রাডার ও অন্যান্য ডাটা বলছে তিনি ঠিক রাস্তাই আছেন।হঠাৎ করেই ভোজবাজির মত গায়েব হয়ে গেল সব।নিচে শুধু বরফ আর বরফ। বিজ্ঞানীরা বলছেন ঠিকই বলেছেন বার্ড।ক্ষণিকের জন্য অন্য ডাইমেনশনে ঢুকে পড়েছিলেন বার্ড।

এতো গেল কাল্পনিক বা এখন পর্যন্ত অবাস্তব কারণসমূহ, যেগুলো ধারণা করা হয় বারমুডা রহস্যগুলোর কারণ হিসেবে।তাছাড়াও কিন্তু আরও বড় একটা রহস্য আছে।পৃথিবীর প্রাচীন যুগ থেকেই শক্তিশালী ধনী দেশগুলো ভয় দেখিয়ে, অত্যাচার করে স্বার্থ নেয় অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশগুলোর কাছ থেকে।বিশ্বায়নের এই যুগেও প্রচলিত আছে এই নিয়ম ১ম ও ৩য় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে।হতে পারে বারমুডাও এই সব রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক স্বার্থের আগ্রাসনের স্বীকার।যদি তাই হয় কারা করছে এসব? ধারণা করুন তো কোন দেশ থাকতে পারে এ ষড়যন্ত্রে।

১ম বিশ্বের দেশ সমূহের প্রভাব,রহস্যের জন্য দায়ী দেশসমূহ

হিটলারের কথা মনে আছে আপনাদের? অত্যাচারী অথচ বিচক্ষন, সুক্ষ্ম বুদ্ধির অধিকারী সেই জার্মান রাষ্ট্রনায়ক।মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিজের বুদ্ধির কাছে বরাবরই বোকা বানিয়ে রেখেছেন পুরো বিশ্বকে।এমনকি তার মৃত্যু নিয়েও চরম রহস্য।আজ বারমুডা রহস্য নিয়ে যা বলব তার সাথে উপরের কথা গুলোর অন্য রকম একটা সম্পর্ক আছে।পড়তে থাকুন উওর পেয়ে যাবেন।

বর্তমান বিশ্বে চায়ের কাপে ঝড় তোলার জন্য যে বিষয় সমূহ সিদ্ধহস্ত, তার মধ্যে একটি হল ৩য় বিশ্বের দেশসমূহের উপর ১ম বিশ্বের দেশসমূহের অত্যাচার, আগ্রাসন।৩য় বিশ্বের দেশ সমূহের অশিক্ষা, দারিদ্র, কুসংস্কার ইত্যাদির সুযোগ নিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে নেয় ১ম বিশ্বের দেশগুলো।এবার কয়েকটা প্রশ্ন করি, যেগুলোর উওর দেখলেই বুঝতে পারবেন বারমুডার (Bermuda Triangle) মধ্যে এইসব উদ্ভট কথাগুলো কেন বলছি,

সবগুলো প্রশ্নের উওর একই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।হিজিবিজি লাগছে?ব্যাপারটা পুরো সাজিয়ে বলি, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেঁল (Bermuda Triangle)রহস্যের সমস্তটা যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্ট।একইভাবে U.F.O. বা এলিয়েন রহস্যও!!!পৃথিবীর অন্য মানুষদের মনে ধ্রুমজাল সৃষ্টি করে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এসব করা হয়েছে। 😯

এই কথাগুলো শুধু আমার না, বিশ্বের বহু খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ও গবেষকদের।বলা হয়েছে, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেঁল (Bermuda Triangle), “লিম্বো অফ দ্যা লষ্ট” ইত্যাদি রহস্যময় জায়গাগুলো আসলে বিশ্বের প্রভাবশালী কোন দেশের গোপন গবেষণাগার।সে সব জায়গাগুলো গোপন রাখার জন্যই মানুষের মনে তারা ভয় সৃষ্টি করছে এসব ব্যাপারে।

এক্ষেত্রে আবার অবশ্য দুই ধরনের মতবাদ রয়েছে।এক পক্ষ বলে, U.F.O. এলিয়েন, বারমুডা এসব USA এর সৃষ্টি।অন্যপক্ষ বলে, ঠিক তা না, রহস্য ঠিকই আছে কিন্তু সেসব নিয়ে গবেষনার জন্য এবং একক স্বার্থ সিদ্ধির জন্যই এসব ব্যাপারগুলো নিয়ে স্পষ্ট করে কিছুই বলছে না যুক্তরাষ্ট্র।

এসব রহস্য উদঘাটনে কাজ করেছেন কুসচে ও ড. জেসাপের মত ব্যক্তিরা।ড. জেসাপ বলেছিলেন,

বারমুডা রহস্য ও যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে অনেক রহস্য জেনেছি আমি।শুধু প্রকাশের অপেক্ষা।

পরদিনই US Navy অফিসে ডাক পড়ে তার। ঠিক এক মাস পরে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তার নিজের গাড়িতে। 😥

তবে যত দোষ, নন্দ ঘোষ এর মত শুধু যুক্তরাষ্ট্রকে দোষ দেয়া যায় না।প্রযুক্তি বা অর্থনীতিতে শক্তিশালী অন্যান্য দেশগুলো যেমন: চীন, জাপান, কোরিয়া, অষ্ট্রেলিয়া, রাশিয়া ইত্যাদি দেশগুলোও রহস্যের পিছনে থাকতে পারে।মোট কথা, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের অপার রহস্য হয়তোবা মানব সৃষ্ট।সে যাই হোক কোন দেশকে সরাসরি অপমান করার আমার কোন ইচ্ছা নেই।আমার কথাগুলোর সত্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব আপনাদের উপরই ছেড়ে দিলাম।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল রহস্যের ব্যাপারে বিভিন্ন ব্যক্তিদের গবেষণা ও উক্তি

মি. কুসচে:

প্রথমে এই ব্যক্তির পরিচয় দিয়ে নিই। পুরো নাম লরেন্স ডেভিড কুসচে (Lawrence David kusche) জন্ম নভেম্বর ০১, ১৯৪০ তিনি জন্ম গ্রহণ করেণ উইচকনসিন (Wisconsin) এর রেসিনিতে (Racine) কিন্তু বেড়ে ওঠা অ্যারিজোনা (Arizona)-এর ফোনিক্র (Phoenix) শহরে। ১৯৭০ সালে “Arizona State University” তে একজন লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কাজ করতেন। এর আগে তিনি পেশাদার পাইলট ছিলেন। লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কাজ করার সময় থেকেই তিনি বারমুডা রহস্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন। তিনি গবেষণা শুরু করেন। তিনি তার গবেষণার মাধ্যমে বারমুডা রহস্যগুলোর কারণ হিসেবে প্রকৃতিক বিপর্যয় বা নিছকই দূর্ঘটনাকে দায়ী করেন। তার এ সব গবেষণার ফল সমূহ নিয়ে তিনি তার বিখ্যাত “The Bermuda triangle Mystery Solved” বইটি প্রকাশ করেন ১৯৭৫ সালে।

গবেষণার ফলাফল:

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল ফিরে রহস্যগুলোর ব্যাপারে মি.কুসচে মোটামুটি নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়কে দায়ী করেছেন

তিনি তার বইয়ে “Flight 19” এর রহস্যজনক উধাও হওয়ার ব্যাপারে লিখেছেন। এ ক্ষেত্রে উৎস ছিল তিনি “US Navy” এর রিপোর্ট এবং সেই সব ব্যক্তিদের সাথে কথোপকথন, যারা ঐ বিমান রুটে চলাচলে অভিজ্ঞ ছিলেন। Flight-19 এ থাকা অ্যাভেন্জ্ঞার বিমানগুলো হারিয়ে গেছিল ৫ ডিসেম্বর।কুসচে পুরানো নথিপত্র ঘেটে মিয়ামি ওয়েদার ব্যুরো থেকে তথ্য পান যে ঐ মিয়ামির আকাশে মোটামুটি ধরনের একটা ঝড়ের সৃষ্টি হয়েছিল। মেঘ জমাট বেধেছিল। এসব ব্যাপার বিমান উড্ডয়নের আগেই দেখে নেয়ার কথা কিন্তু তা করেনি Flight 19 এর কর্তারা। শুধু দোষ তাই প্রকৃতিক বিপর্যয়ে গুলক্রমে জমাট মেঘে ঢুকে পড়া, রেডিও বিকল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি অবশ্যই সম্ভব। দোষ দেয়া হয় শুধু শুধু বেচারা বারমুডার। তবে এখানেও প্রশ্ন রয়ে যায়, যেমন: পাঁচটা বিমানই একসাথে ভুল করল কেন? ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে একটারও ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেল না কেন? অনেকগুলো প্রশ্নের উওর নেই। তাই Flight 19 এর ব্যাপারে কুসচে বলেন, “আসলে Flight 19 এর উধাও হওয়াটা শুধুমাত্র দূর্ঘটনা হওয়া অসম্ভব কিছু নয় কিন্তু রহস্য আছেই”

তবে DC-3 বিমানের হাওয়া হয়ে যাওয়ার জন্য দুর্ঘটনাকে দোষী প্রমান করেই ছেড়েছেন কুসচে। মজার ব্যাপার হল DC-3 এর দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করেছিল একাধিক টিম। এ কারনেই তদন্তের রিপোর্ট ছিল একাধিক। মজার কথা এক একটা রিপোর্টে দূর্ঘটনার কারণ এক একরকম ছিল। 😆

বিমান ছাড়ার সময়ের কথাই ধরা যাক, কয়েকটা রিপোর্টে লেখা রাত ১০টা ৩০ মিনিট আবার অন্য এক জায়গায় লেখা ১১টা ৩০ মিনিট। তারপর প্রথম থেকেই কম্পাস, রেডিও, ল্যান্ডিং গিয়ার ইত্যাদি চালনার জন্য ব্যাটারিতে গন্ডগোল ছিল। এ কারনে আগের দিনের ফ্লাইট বাতিলও করা হয়েছিল। কিন্তু দূর্ঘটনার দিন একরকম জোর করেই ব্যাটারিতে পানি ভরে ফ্লাইট চালানো হয়। তাতে অবশ্য সাময়িকভাবে চালু হয়েছিল যন্ত্রপাতি সমূহ। তাই কুসচের মতে স্যান জুয়ানো থেকে মিয়ামি যাওয়ার পথে দূর্ঘটনায় পড়াটা খুব স্বাভাবিক। তার উপর কম্পাস বা রেডিও ব্যাটারির অভাবে কাজ করছিল না। আর উওর আন্টলান্টিকের গভীর সমুদ্রে, দুর্দান্ত ঢেউয়ের মাঝে আস্ত বিমান খানা পড়লে ধ্বংসাবেষ কেন তেলের ফোটাও খুঁজে পাওয়ার কথা না। 😯

তাই কুসচে আত্মবিশ্বাসের সাথেই রায় দেন DC-3 নিছকই একটি দূর্ঘটনার শিকার।

এরকমই আরো বেশ কয়েকটি রহস্যের কারণ হিসেবে কুসচে দূর্ঘটনা বা প্রকৃতিক দুর্যোগকে দায়ী করেছেন ও তার স্বপক্ষে যুক্তিও দিয়েছেন। এরকম আরো ঘটনা নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করব পরের পর্বে। সে পর্যন্ত ভালো থাকবেন……

আরো কিছু ভুল ধারনা

Rosini (রোসিনি)

প্রথমেই আসি বাহামার অন্তর্গত ‘ন্যাসো’ বন্দরের কাছাকাছি পাওয়া যাওয়া একটি জাহাজের ঘটনায়। ১৮৪০ সালে পাওয়া যায় এটি যার নাম “রোজিনি।” তবে এটার নাম নিয়েই আছে যত গণ্ডগোল। কাগজে কলমে Rosini (রোসিনি) আরেকটি জাহাজ ছিল যা বাহামায় আটকে পড়েছিল তাই সমস্ত মালপত্রসহ যাত্রীদের স্থানান্তরিত করা হয়। রোজিনি কেও পাওয়া গেছে জনমানব শূন্য আজব ভাবে ভাসমান অবস্থায়।

ইতিহাস বলে রোসিনি এর আটকে পড়া ও যাত্রী স্থানান্তর খুবই সাধারণ, কিন্তু রোজিনি এর খুঁজে পাওয়া রহস্যজনক। কিন্তু কুসচে বলেন, রোজিনি আর রোসিনি দুটো একই। যুক্তি? দুটো একই জায়গায় আটকে গিয়েছিল, একই রুটে। তবে সবচেয়ে বড় যুক্তি হল, ইংরেজি বানান Rosini-এর S এর উচ্চারণ কোন কোন অঞ্চলে J এর মত উচ্চারিত হয়। এই জন্য রোসিনি হয়ে গেছে রোজিনি। তাতেই এত রহস্যের সূত্রপাত।

মেরি সিলেষ্ট (Mary Celeste)

রহস্যজনক ভাবে খুঁজে পাওয়া জাহাজগুলোর মধ্যে অন্যতম “মেরি সিলেষ্ট।” কুসচে সন্দেহ করেছিলেম আসল কারসাজিটা ক্যাপ্টেন মূর হাউসের। পরিকল্পিতভাবে তিনি হত্যা করে ফেলে দিয়েছিলেন গুটিকয়েক বাদে সব যাত্রীদের। তারপর জাহাজ মাঝ সমুদ্রে ফেলে চলে আসেন। তবে এর পক্ষে কোনও শক্ত যুক্তি তিনি দেখাতে পারেন নি।

USS Cyclops

১ম মহাযুদ্ধের সময় বেশ রহস্য সৃষ্টি করেই বেমালুম গায়েব হয়ে যাওয়া “USS Cyclops”-এর জন্য সাধারণ মানুষ পরোক্ষভাবে দায়ী করে বারমুডাকে। কিন্তু “US Naval Inteligence” বলে ভিন্ন কথা। তাদের মতে জাহাজটি হারিয়ে যাওয়ার পিছনে যে কারণগুলো হতে পারে তা হল:

  1. যুদ্ধকালীন সময়ে হয়তো বিদ্রোহ করেছিল জাহাজের নাবিকেরা
  2. মার্কিন বাহিনীর সদস্য হলেও দু একজন জার্মান সমর্থক ছিলেন ঐ জাহাজে। জার্মানদের হাতে তারাই তুলে দিতে পারেন জাহাজখানা
  3. জাহাজটির ক্যাপ্টেন “ওরহি”(Orhee)-এর জন্মস্থান জার্মানি। সুতরাং যুদ্ধক্ষেত্রে তার মাতৃভূমির প্রতি দেশপ্রেম জেগে ওঠাটা বিচিত্র কিছু নয়।
  4. জার্মান সাবমেরিন গুলোর টর্পেডোর আঘাতের স্বীকার হতে পারে।
  5. ম্যাঙ্গানিজ ভর্তি ছিলো সাইক্লোপস। অসাবধানতাবশত আগুন লেগে বিস্ফোরিত হয়ে যাওয়াটা অবাস্তব কিছু না।

তবে এগুলোর স্বপক্ষে তেমন কোন যুক্তি ছিল না।

১৯৬৮ সালে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া সাবমেরিন “স্করপিয়ন” খুঁজতে “মরফোক” বন্দরের সত্তর মাইল পূর্বে ডুবুরি নামানো হয়। ডিন হাস নামে এক অভিজ্ঞ ডুবুরি ছিলেন। সাগরে ১৮০ ফুট গভীরে পুরানো কাঠামোর এক জাহাজ দেখতে পান তিনি। উপরে এসে সবাইকে জানানো হল। পুরানো বড় বড় জাহাজের ছবি দেখানো হলে একটা জাহাজের ছবি চেনা চেনা মনে হল তার। ছবিটি ছিল সাইক্লোপসের। কুসচে এর মতে ডিন হাস-এর দেখা জাহাজটি তুলে আনলেই সমাধান হয়ে যাবে সব রহস্যের।

এরকম বেশ কিছু রহস্যের সমাধানের চেষ্টা করেছেন কুসচে। কিন্তু যেগুলো সেগুলো বাদে অন্যগুলো তেমন যুক্তিপূর্ণ নয়। সত্যি কথা বলতে রহস্যময় বারমুডার(Bermuda Triangle) রহস্যের শেষ নেই।

শেষ কথা

এই আর্টিকেল এ আমরা আলাদা আলাদাভাবে আলোচনা করেছি বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে নানা খুটিনাটি তথ্য ও রহস্যময় ঘটনাবলি।মানুষ হিসেরে অনিচ্ছাকৃত ভুলগুলোর জন্য ক্ষমা চাচ্ছি।যেহেতু আমি নিজে কোনো দিন বারমুডা যাইনি কিংবা যাওয়ার সম্ভাবনাও খুবই কম সেহেতু এই সিরিজে লেখা সমস্ত তথ্যের উৎস বিভিন্ন সার্চ ইজ্ঞিন,বিভিন্ন ব্লগসমুহ, আর বিভিন্ন দেশের পত্রিকা ও ম্যাগাজিনসমূহ।বারমুডা রহস্যের শুধুমাত্র কিছুটা অংশ হয়তো আমরা উদঘাটন করতে পেরেছি। সময়ের সাথে সাথে আরো অনেক কিছু জানা যাবে।

About Author: 🎉 Salman Hossain Saif (internet username: Saif71).
Lead UX Engineer @ManagingLife LLC. Specialized in design systems, user flow, UX writing, and a certified accessibility specialist. Loves travel and creating meaningful content. Say hi @imsaif71

You may also like


🎉 Have a nice day!