টাইটানিক বস্তুটা চিনে না বা নাম শোনে নাই এমন পাবলিক দুনিয়ায় আছে
কিনা সন্দেহ আছে। ইতিহাসের অসাধারণ সৌন্দর্য আর অসীম রহস্যের উৎস টাইটানিক
নিয়ে লেখা হয়েছে অনেক। বাংলা ভাষাতেও লেখা হয়েছে, তবে ততটা তথ্য সমৃদ্ধ
না। টাইটানিক নিয়ে এ সিরিজে আপনারা জানতে পারবেন আরও নতুন সব তথ্য আরও
অজানা সব রহস্য। আশা করি সাথেই থাকবেন।
প্রথমেই সিরিজের এরকম উদ্ভট নামকরণ কেন করলাম তা বলি। টাইটানিক সিনেমা
টা যখন প্রথম দেখি তখন অনেক ইচ্ছে জেগেছিল আমার Girlfriend কে নিয়েই ঐরকম
একটা জাহাজের ডেকে দাঁড়াবো। কিন্তু আমার Girlfriend এই ইচ্ছাকে গলা টিপে
হত্যা করে। বলেছিল আমার মাথা নাকি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল । তাই আজ যখন আবার
টাইটানিক নিয়ে ঘাটাঘাটি করছি তখন পুরনো আবেগ গুলো আবার নতুন করে জেগে উঠল।
তাই এরকম নাম দেয়া।
টাইটানিক ছিল তৎকালীন ইন্জ্ঞিনিয়ারদের জন্য সর্বাধুনিক এক সৃষ্টি,
সৌন্দর্য পিপাসুদের কাছে সৌন্দর্যের ভাণ্ডার। কিন্তু কেনই বা এমন করুন
পরিণতি হল অসাধারণ এই সৃষ্টির? কে, কারা বা কি ছিল এর পিছনে? চলুন প্রথমেই
শুরু করি এর জন্ম ইতিহাস থেকে।
টাইটানিক এর জন্মস্থান নর্দান আয়ারল্যান্ড। রাজধানী বেলফাষ্ট।
বেলফাষ্টের প্রকৃতির মতই মনের মাধুরী মিশিয়ে অসাধারণ আর্কিটেকচারে তৈরি
করেছিল প্রস্ততকারক কোম্পানি, “হারল্যান্ড অ্যান্ড উলফ (Harland and
Wolff)”
যেটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৬১ সালে যার প্রকৃত মালিক Fred. Olsen
Energy ইতিহাস গড়া বেশ কয়েকটি জাহাজ এই শিপবিল্ডার কোম্পানিরই তৈরি করা
যেমন: দি হোয়াইট স্টার (The White Star), ব্রিটানিক (Britannic), এইচ এম
এস বেলফাষ্ট (HMS Belfast), আনডেস (Andes), সাউদান ক্রস (Southern Cross),
ক্যানবেরা (Cannbera), অলিম্পিক (Olympic) [যাকে বলা হয়ে ছিল টাইটানিক-এর
যমজ ভাই], আর এম এস টাইটানিক (RMS Titanic) ইত্যাদি।
টাইটানিক এর কাজ শুরু হয় ৩১ মার্চ ১৯০৯ ও নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয় ২
এপ্রিল ১৯১২ সালে। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও হারল্যান্ড অ্যান্ড উলফের
১২০০ কর্মীর প্রত্যেকই সুযোগ পেয়েছিল টাইটানিক নির্মাণে অংশগ্রহণ করে
ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার। টাইটানিকের প্রধান নকশাকার ছিলেন হোয়াইট স্টার
লাইন কোম্পানির
মালিক Bruce Ismay এর নাতনি থমাস অ্যান্ড্রিউস (Thomas Andrews)
টাইটানিকের অসাধারণ ইন্জ্ঞিনিয়ারিং বর্ণনায় যাওয়ার আগে এর নির্মাণ
কাজ নিয়ে সে সময় প্রচলিত কিছু কুসংস্কার নিয়ে একটু বলি। শুরু থেকেই এত
বড় জাহাজ নির্মাণ নিয়ে অনেক কানাঘুষা শুরু হয়। গুজব উঠেছিল জাহাজ
নির্মাণে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকেরা নাকি জাহাজ নির্মাণ শেষে পাগল হয়ে যাবে।
কারণ? টাইটানিক নাকি তাদের সমস্ত স্মৃতি কেড়ে নেবে ভিত্তিহীন তো অবশ্যই, গুজবটা কিন্তু বেশ মজারও………….
বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই একটা সাধারণ কুসংস্কার প্রচলিত আছে যে,
বড় কোন কিছু সৃষ্টিতে, কিছু মানুষের জীবন নিতে হয়। সে সময় টাইটানিকের
ব্যাপারে কুসংস্কারটা একটু Modify করা হয়
তখন প্রচলিত হয়েছিল যে, এর নির্মাণ শ্রমিকদের স্ত্রীদের কারোরই সন্তান
হবে না। কিন্তু ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় প্রধান ডিজাইনার থমাস অ্যান্ড্রিউসই
দুটি যমজ সন্তানের বাবা হন। এখন কি বলবেন নিন্দুকেরা? Exception is not
example!!!
আজ এই পর্যন্তই থাক। আগামী পর্বে টাইটানিকের অবিস্মরণীয় ইন্জ্ঞিনিয়ারিং নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।